সনাতন বা হিন্দুধর্মের স্বরূপ তত্ত্ব
সনাতন
বা হিন্দুধর্মের দুটি দিক- (ক) তত্ত্ব এবং (খ) সাধনা। হিন্দুধর্ম শুধুতত্ত্ব আলোচনা
করেনি বরং তত্ত্বের ভিত্তিতে সাধনার দ্বারা তত্ত্বের উপলব্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
হিন্দুধর্ম সাধনার উপর অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করেছে। একমাত্র প্রত্যক্ষানুভূতিতেই ঈশ্বরকে
জানা যায়, তার জন্য প্রয়োজন কঠোর সাধনা।
হিন্দুধর্ম দু’ই প্রকার- যথাঃ (ক) সামান্য এবং (খ) বিশেষ। এখানে ধর্ম বলতে শাস্ত্রবিহিত কর্তব্য কর্মকে
বুঝিয়েছে। নীতিসম্মত যে সব আচরণ মানুষের করণীয় সেইগুলি হল সামান্য ধর্ম। হিন্দুধর্ম মতে, এই
সামান্য ধর্মের দশটি সাধারণ লক্ষণ সেই গুলি হলঃ- ধৃতি, ক্ষমা, দম বা শীত, তাপ, সহিষ্ণুতা, অস্তেয়
বা চুরি না করা, শৌচ বা দেহ-মনের নির্মলতা, ইন্দ্রিয়-নিগ্রহ, ধী, বিদ্যা, সত্য এবং
অক্রোধ। এই সব কর্ম সম্পাদনে চিত্তশুদ্ধি ঘটে। বিশেষ বিশেষ কালে বিশেষ বিশেষ
মানুষের যে সব নীতিসম্মত করণীয় কর্ম সেই গুলি হ’ল বিশেষ ধর্ম।
হিন্দুধর্ম মতে, ধর্ম সম্পর্কে সংশয় দেখা দিলে বেদ, স্মৃতি, সাধুগণের
আচার-ব্যবহার এবং বিবেক এর অনুমোদনের উপরই নির্ভর করা যুক্তিযুক্ত।
হিন্দুধর্মে দু’টি পথ। যথাঃ- (ক) প্রবৃত্তিমার্গ এবং (খ) নিবৃত্তিমার্গ।
প্রথমটি হল ভোগের আর দ্বিতীয়টি
হল ত্যাগের পথ। মানবজীবনের লক্ষ্য সম্বন্ধে হিন্দুধর্মের প্রবৃত্তিমার্গের তিনটি লক্ষ্য
এবং নিবৃত্তিমার্গে একটি লক্ষ্য নিরূপণ করা হয়েছে। প্রবৃত্তিমার্গে- ধর্ম, অর্থ, কাম এবং নিবৃত্তিমার্গে একমাত্র মোক্ষ। গৃহস্থাশ্রম হল প্রবৃত্তিমার্গ
আর বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস আশ্রম হল নিবৃত্তিমার্গ। গৃহীর পুরুষার্থ হল ধর্ম, অর্থ ও
কাম এবং সন্ন্যাসীর পুরুষার্থ হল মোক্ষ। হিন্দুধর্মের চরম লক্ষ্যই হল মোক্ষ কিন্তু
এ ধর্মে সুখই মানবজীবনের চরম লক্ষ্য নয়।
==বাংলাদেশ সেবাশ্রম==
0 comments:
Post a Comment
Note: Only a member of this blog may post a comment.